
শনিবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » এগিয়ে যাও বাংলাদেশ » যুব সমাজের জলোৎসব অনুষ্ঠান প্রত্যাখানের মধ্যদিয়ে রাঙামাটিতে মারমা সম্প্রদায়ের জলকেলি উৎসব
যুব সমাজের জলোৎসব অনুষ্ঠান প্রত্যাখানের মধ্যদিয়ে রাঙামাটিতে মারমা সম্প্রদায়ের জলকেলি উৎসব
মোস্তফা রাজু :: পাহাড়ি জনপদে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের প্রাণের উৎসব সাংগ্রাই। শনিবার রাঙামাটির চিং হ্লা মং মারী স্টেডিয়ামে জলকেলি ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই বর্ণিল উৎসবের সমাপ্তি ঘটে।
পুরাতন বছরের দুঃখ-গ্লানি ধুয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতি বছর এই উৎসব পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রদায়ের মিলনমেলায় পরিণত হয়।মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসাস) আয়োজিত এই উৎসবের উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
শনিবার সকাল ১১টায় ফিতা কেটে এবং পানি ছিটিয়ে তিনি জল উৎসবের শুভ সূচনা ঘোষণা করেন। মাসসের একাংশের সভাপতি থোয়াই সুই খই মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। সাংগ্রাই উৎসব, যা বৈসাবি উৎসবের একটি অংশ, মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক আয়োজন। ‘বৈসাবি’ নামের ‘সা’অক্ষরটি এই সাংগ্রাই থেকে এসেছে। জলকেলির মাধ্যমে পুরানো বছরের অশুভ শক্তি দূর করে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করাই এর মূল উদ্দেশ্য। শত শত মারমা তরুণ-তরুণী রঙিন পোশাকে সেজে একে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন। একদিকে মঞ্চে মারমা শিল্পীদের গান-নৃত্য মুগ্ধ করে দর্শকদের, অন্যদিকে জলকেলির উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে পুরো স্টেডিয়ামে।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামে সব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সবাই বাংলাদেশী, এখানে বড়-ছোট কোনো ভেদাভেদ নেই।” তিনি খাগড়াছড়িতে অপহৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর বিষয়ে বলেন, “সেনাবাহিনী তাদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে। আশা করি, তারা দ্রুত মুক্ত হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”এই উৎসবে পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে সাংগ্রাই একটি সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় রূপ নেয়, যা পার্বত্য অঞ্চলের ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক হয়ে ওঠে।
রাঙামাটির মারি ষ্টেডিয়ামে শনিবারের সাংগ্রাই জলোৎসব প্রত্যাখানের আহবান
এদিকে মারমা যুব সমাজ রাঙামাটি পার্বত্য জেলা নামের সংগঠনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, শনিবার রাঙামাটি জেলায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই জলোৎসব অনুষ্ঠানটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পাশাপাশি নানানমুখী রাজনীতিকরণ হওয়ার বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় এই অনুষ্ঠানে আগতদের উপর হামলা হওয়ার আশঙ্কা হওয়ায় আমরা মারমা তরুণ সমাজ এই অনুষ্ঠান পরিত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তাই আমাদের মারমা সমাজের তরুন-তরুনীদের নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি মারমা জাতিগোষ্ঠির ঐহিত্যবাহি সার্বজনিন একটি অনুষ্ঠানকে বহুল বিতর্কিত করায় আমরা নতুন প্রজন্ম এই বিতর্কে না জড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
আমরা আমাদের মারমা জাতিগোষ্ঠির বৃহত্তর স্বার্থে বিতর্ক এড়ানোর লক্ষ্যে সকল মারমা তরুন-তরুনীদের উক্ত অনুষ্ঠানে অংশ না নেওয়ার আহবান জানানো হয়।