
বুধবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » এগিয়ে যাও বাংলাদেশ » রাজস্থলীতে মারমা সম্প্রদায়ের জলকেলি উৎসব পালিত
রাজস্থলীতে মারমা সম্প্রদায়ের জলকেলি উৎসব পালিত
রাজু :: পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত করতে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলায় মারমা সম্প্রদায়ের উদ্যোগে ১৬ এপিল বুধবার বর্ণাঢ্যভাবে পালিত হয়েছে সাংগ্রাই রিলং পোয়ে বা জলকেলি উৎসব।
রাঙামাটি মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা (মাসস) আয়োজিত এই উৎসব বাঙ্গালহালিয়া স্কুল মাঠে দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়। দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই উপজেলা জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম মাহমুদুল হাসান সোহাগ।
সাংগ্রাই রিলং পোয়ে উদযাপন কমিটির সভাপতি মং সুই প্রু মারমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কাপ্তাই জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর ফয়েজ আহমেদ, রাজস্থলী সাব-জোন কমান্ডার মেজর হাসিব ইমাম, ক্যাপ্টেন আহসানুল হক কবির এবং উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আদুমং মারমা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মং (মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ঘন্টা) বাজিয়ে উৎসবের শুভ সূচনা করেন প্রধান অতিথি ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। এরপর ফিতা কেটে এবং পানি ছিটিয়ে জলকেলি উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। উদ্বোধনের পর মারমা তরুণ-তরুণীরা দলে ভাগ হয়ে ডিঙ্গি নৌকায় রাখা পানি দিয়ে একে অপরের উপর ছিটিয়ে জলকেলির আনন্দে মেতে ওঠেন।জলকেলির পাশাপাশি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পীরা ঐতিহ্যবাহী গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে। এছাড়া, বাঙ্গালহালিয়া স্কুল মাঠে গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়।
মেলায় খাবার, পোশাক, এবং গৃহস্থালি পণ্যের স্টল বসে, যা স্থানীয় লোকজ সংস্কৃতির প্রাণবন্ত প্রদর্শনী হিসেবে আলো ছড়ায়।মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা মাসসের সভাপতি মং সে প্রু বলেন, “সাংগ্রাই রিলং পোয়ে আমাদের জন্য শুধু একটি উৎসব নয়, এটি পুরাতন বছরের দুঃখ-গ্লানি ধুয়ে নতুন বছরকে আনন্দে বরণ করার একটি প্রতীক। প্রতি বছর আমরা এই উৎসবের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। এটি পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের মিলনের একটি অপূর্ব মঞ্চ।”উৎসবে হাজারো নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর অংশ নিয়ে সাংগ্রাই গানের তালে তালে জলকেলির আনন্দে মেতে ওঠেন। এই আয়োজন পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতির একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।
উল্লেখ্য আগামী ১৯ এপ্রিল রাঙামাটির চিং হ্লা মং মারী স্টেডিয়ামে জলকেলির মাধ্যমে সাংগ্রাই উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।