
মঙ্গলবার ● ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » উপ সম্পাদকীয় » আজ ঐতিহাসিক পাকুয়াখালী গণহত্যা দিবস
আজ ঐতিহাসিক পাকুয়াখালী গণহত্যা দিবস
অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন সুজন :: আজ ৯ সেপ্টেম্বর’২৫ ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বরের এই দিনে লঙ্গদু এবং বাঘাইছড়ি উপজেলার মধ্যবর্তী পাকুয়াখালী নামক স্থানে তৎকালীন শান্তি বাহিনী অত্র অঞ্চলের কাঠ ব্যবসায়ী ও কাঠুরিয়াদের আমন্ত্রণ করেছিল একটি ভোজ সভাই যোগদানের জন্য।
সকল লোকজন যথারীতি সকাল ১০.০০ ঘটিকার মধ্যেই পৌঁছেছিল কিন্তু কি হয়েছিল আমরা জানিনা। দুপুরের পর থেকেই একটা আওয়াজ আমরা পাচ্ছিলাম, তারপরে আমাদের কাছে একমাত্র বেঁচে যাওয়া ইউনূসের মাধ্যমে সংবাদ আসে যে, আমন্ত্রিত সকল কাঠ ব্যবসায়ী ও কাঠুরিয়াদের বর্বরোচিত ভাবে সন্তুলারমার নির্দেশে শান্তি বাহানীরা হত্যা করে।
তারপরেই সেনাবাহিনী বিডিআর যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ঐ পাকুয়াখালি ট্রাজেডি ক্ষতবিক্ষত ভিকটিমদের লাশ উদ্ধার করে।
তৎকালীন সময় লঙ্গদু বাঘাইছড়ি তথা রাঙ্গামাটির আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে সর্বত্র শোকেরছায়া নেমে আসে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি জনগোষ্ঠী বিহবল হয়ে পড়ে। ক্ষুভে ভয়ে সকল জনগোষ্ঠী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের ৪ মন্ত্রী লঙ্গদুতে ছুটে আসে। লঙ্গদু-বাঘাইছড়ির লাখো জনতাকে প্রতিশ্রুতি দেয় যে, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করবে, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিবে। জনরোষ চাপা দিয়ে মন্ত্রীরা ঢাকায় ফিরে যায় এবং পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবসের পুরস্কার স্বরূপ ২ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে পার্বত্যবাসির উপর অসম, অন্যায় ও অযৌক্তিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি চাপিয়ে দেয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগোষ্ঠী আবার বিহবল হয়ে পড়ে।
অত্রাঞ্চলের মানুষ বেচে থাকার শেষ আশাটুকু হারিয়ে ফেলে। তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়ে ১৯৯৮ সালে বেগম খালেদা জিয়া খাগড়াছড়িতে লংমার্চ করে, অধ্যাপক গোলাম আযম রাঙ্গামাটিতে লংমার্চ করে, ফজলুল হক আমিনী বান্দরবনে লংমার্চ করে সকল জাতীয় নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালি জনগোষ্ঠিকে প্রতিশ্রুতি দেয় যে, চার দলীয় জোট যদি ক্ষমতায় যায় তবে বিতর্কিত অসম পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’৯৭ কালো চুক্তি আখ্যায়িত করে তা বাতিল করা হবে।
২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এসে ১৯৯৮ সালে পার্বত্য বাসীকে দেওয়া সকল প্রতিশ্রুতি বেমালুম ভুলে যায় একের পর এক বিতর্কিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’৯৭ বাস্তবায়ন করতে থাকে।
শুধু তাই নয় ভূষণছড়া গণহত্যার নায়ক মনির স্বপন দেওয়ান ওরফে মেজর রাজেশ কে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয় মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত বঞ্চিত শোষিত মানুষ আবারও রাজনৈতিক প্রতারণার শিকার হয়।
আজ ঐতিহাসিক পাকুয়াখালী গণহত্যা দিবস, এই দিবস থেকে আগামী সরকারকে বলতে চাই পার্বত্য চট্টগ্রাম অসম চুক্তি বাতিল করে পাকুয়াখালী গণহত্যাসহ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল আইনি বৈষম্য দূর করে সকল নাগরিকের সম-অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন সুজন,
নির্বাহী পরিচালক DPC
(পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তির জন্য আলোচনা)
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।