
মঙ্গলবার ● ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গণহত্যার বিচার ও পুনর্বাসনের দাবিতে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের শোকসভা
গণহত্যার বিচার ও পুনর্বাসনের দাবিতে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের শোকসভা
মো. কামরুল ইসলাম :: পার্বত্য চট্টগ্রামে সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যাগুলোর বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের দাবিতে রাঙামাটিতে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় শহরের শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ, রাঙামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালী এলাকায় নির্মমভাবে ৩৫ জন কাঠুরিয়াকে হত্যা করা হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রায় তিন দশক পার হলেও আজও এর সুষ্ঠু তদন্ত বা বিচার হয়নি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা শাখার সহ-সভাপতি কাজি জালোয়ার। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান। এ ছাড়া সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ইব্রাহিম, যুগ্ম সম্পাদক সেলিম উদ্দিন, মো. নজরুল ইসলাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের জেলা সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ইফতেখার সওকতসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি পাহাড়কে অস্থির করেছে’
বক্তারা অভিযোগ করেন, পাকুয়াখালী হত্যাযজ্ঞের দায়ে অভিযুক্ত শান্তি বাহিনীর নেতার সঙ্গে তৎকালীন সরকার চুক্তি করলেও ভুক্তভোগীরা ন্যায্য বিচার পাননি। শুধু পাকুয়াখালী নয়, এর আগে ও পরে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক গণহত্যা ঘটলেও সেসবেরও বিচার হয়নি। এর ফলে পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি’ গড়ে উঠেছে, যা নতুন করে সহিংসতার পথ তৈরি করেছে।
তারা আরও বলেন, এখনো পাহাড়ে অপহরণ, চাঁদাবাজি, চুক্তিভিত্তিক হত্যাকাণ্ড এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত আছে। এসব নিয়ন্ত্রণে সরকারের দৃশ্যমান উদ্যোগ না থাকায় সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং কঠোর সাঁড়াশি অভিযান চালানোর দাবি জানান তারা।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন দাবি আয়োজকরা বলেন, পাকুয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানে গণহত্যার শিকার পরিবারগুলোকে সরকারিভাবে পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। অনেকে জীবিকার অভাবে নিদারুণ দুঃখ-দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছেন। ফলে নতুন করে পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্গঠন জরুরি হয়ে পড়েছে।
বিদেশি ষড়যন্ত্র ও আদিবাসী স্বীকৃতির দাবি’বক্তারা বিদেশি শক্তির মদদে পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী’ স্বীকৃতির দাবি তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তাদের মতে, এটি দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। এ বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।
দাবি সমূহ।পাকুয়াখালীসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল গণহত্যার বিচার।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসন পাহাড় থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার
সন্ত্রাস দমনে সাঁড়াশি অভিযান।
বিদেশি ষড়যন্ত্র প্রতিহত ও ভ্রান্ত ‘আদিবাসী স্বীকৃতি’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা।
সভায় বক্তারা একসুরে বলেন, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি আসবে না।