
শুক্রবার ● ৪ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » ফটিকছড়িতে হালদাভ্যালী চা বাগানের একতরফা পানি উত্তোলন
ফটিকছড়িতে হালদাভ্যালী চা বাগানের একতরফা পানি উত্তোলন
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :: চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে বারোমাসিয়া খালের গতি পরিবর্তন করে হালদাভ্যালী চা বাগান অবৈধভাবে একতরফা পানি উত্তোলনের দায়ে অভিযান চালিয়ে পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে উপজেলা প্রসাশন।
শুক্রবার ৪ এপ্রিল দুপুরে বারোমাসিয়া খালে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, বারোমাসিয়া সেচ প্রকল্প থেকে পানির দিক পরিবর্তন করে একতরফা পানির পাম্প দিয়ে মিনিটে প্রায় ১২০০ লিটার পানি উত্তোলন করছে। এতে প্রায় ৫০০ একর বোরো ফসলের ক্ষতি করছে হালদাভ্যালি চা বাগান। অভিযোগ পেয়ে হালদা ভ্যালি চা বাগানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে চারটি পয়েন্টে খালের উজানে পানির ডাইভারশন বন্ধ করা হয় ও পানির পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
জানা যায়, প্রান্তিক কৃষকদের চাষাবাদের সুবিধার্থে ১৯৮০ সালে উপজেলার নারায়ণহাট ইদিলপুর এলাকায় একটি মাঝারি ধরনের স্লুইসগেট স্থাপন করে সরকার। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে এটি ব্যবহার করে শত শত কৃষক তাদের চাহিদামতো বোরো চাষাবাদ করেন। কিন্তু প্রতিবছরই বাগান কর্তৃপক্ষের গোয়ার্তুমির কারণে এলাকার শত শত কৃষক তাদের চাহিদামতো চাষাবাদ করতে পারেন না। ফলে কৃষকরা বিষয়টি উপজেলা প্রসাশনকে অভিযোগ করে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সোহাগ তালুকদার বলেন, “ভবিষ্যতে একতরফা পানি উত্তোলন করা হলে হালদা ভ্যালি চা বাগানের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে।”
ফটিকছড়িতে পানির তীব্র সংকটে চরম দুর্ভোগ
ফটিকছড়ি :: চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে পানির জন্য চলছে হাহাকার,নলকূপে মিলছেনা পানি। এমনকি পানির মোটর দিয়েও পানি তোলা সম্ভব হচ্ছেনা। এমতবস্থায় খাবার পানি ও ব্যবহারের পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।
উপজেলার দুই পৌরসভাসহ সবকটি ইউিয়েনের দুই তৃতীয়াংশ গ্রামে নলকূপে এখন মিলছে না পানি। বছর পাঁচেক আগেও যেসব এলাকায় পানি ছিল সহজলভ্য, এখন সেখানেই তীব্র সংকট। এখানে অসংখ্য ছড়া, খাল ও নদী থাকার পরও চলছে হাহাকার। ফলে দিশেহারা লাখো মানুষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃষিতে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বেড়েছে। অপরিকল্পিতভাবে পানি তোলার কারণে ক্রমাগত নামছে পানির স্তর। আবার জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টি কমেছে। ফলে গ্রামের মানুষকেও এখন তৃষ্ণা মেটাতে টাকা খরচ করতে হচ্ছে। লাগামহীন পানি তোলা বন্ধ না হলে সামনে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেবে।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও হালদা-ধুরুং নদীর চর শস্যের অন্যতম ভান্ডার। গত কয়েক বছরে রবিশস্য ছেড়ে বোরো ধান চাষে ঝুকেছেন কৃষকরা। শুষ্ক মৌসুমে ধান আবাদই এখন উপজেলার জন্য অভিশাপ। খাল-বিল-ডোবায় ভরপুর মিঠাপানির রাজ্যে এখন হাহাকার। ধান চাষে ভূগর্ভের পানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে নলকূপে উঠছে না পানি। পরিকল্পনা ও অনুমোদন ছাড়াই চাষিরা এক-দেড় হাজার গভীর নলকূপ বসিয়ে সেচকাজে ব্যবহার করছেন। এর প্রভাবে উপজেলাজুড়ে পানির হাহাকার চলছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের হিসাবে, এখানে আড়াই হাজারের বেশি গভীর সেচ পাম্প রয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের হিসাবে রয়েছে ২৫০টি। চাষিরা ব্যক্তিগতভাবে তিন হাজারের বেশি পাম্প বসিয়েছেন। একটি গভীর নলকূপে প্রতি ঘণ্টায় দেড় হাজার কিউসেক পানি উঠে। গভীর-অগভীর নলকূপ স্থাপনের ফলে ভূগর্ভ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলনে দ্রুত নামছে স্তর। ফলে গত পাঁচ বছরে অন্তত ১০ ফুট নেমেছে পানির স্তর।
বি এন পি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন ফটিকছড়ি পৌরসভার প্রায় এলাকায় পানির সমস্যা। এলাকাবাসী দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
এডভোকেট এমরান সরকার বলেন,দাঁতমারা ইউনিয়ন কোন নলকূপে পানি নেই।
দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. সাজিব বলেন, বাড়ির নলকূপসহ এলাকার কোথাও পানি নেই। ফলে নিত্য ব্যবহার্য্যের কাজে পানির অভাব মারাত্মকভাবে দেখা দিয়েছে। দিনের বেশিরভাগ সময় দুর-দুরান্ত থেকে পানি এনে গৃহস্থালীর কাজ সারা হচ্ছে।’
উপজেলা পরিবেশ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সোলাইমান আকাশ বলেন, ‘পানির অপচয় রোধ করতে হবে। প্রচুর গাছপালা লাগানো, নদী ও খালবিলের গভীরতার পাশাপাশি সংখ্যা বাড়ানো দরকার। যেন বৃষ্টির পানি দীর্ঘদিন জমা থাকে এবং কৃষিকাজে ব্যবহার করা যায়।’
উপজেলা জনস্বাস্থ্যপ্রকৌশলী মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার যে সব অঞ্চলে তীব্র পানির সংকট সেখানে আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি। শীঘ্রই সেচপাম্পগুলো ব্যবহারে নীতির আওতায় আনা হবে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আগে আমনের পাশাপাশি রবি ফসল হতো। ইদানিং সেখানে পানিনির্ভর বোরো হচ্ছে। এ চাষাবাদ পুরোটাই ভূগর্ভস্থ পানিনির্ভর। অন্যদিকে গড় বৃষ্টিপাত কমেছে। পানি উত্তোলন বেড়েছে। আবার বৃষ্টি কমে যাওয়ায় মাটির নিচে পানির পুনর্ভরণ হচ্ছে না। এ জন্য পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকলে শিগগির পানিশূন্য অবস্থা তৈরি হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তীব্র পানি সংকটের খবরে উপজেলার জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রকৌশলীদের সাথে নিয়ে বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি।
তীব্র পানি সংকট মোকাবিলায় নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জরুরি ভিত্তিতে আর্টিসিয়ান কূপ গুলিতে গেইট ভালব স্থাপন করে পানির অপচয় রোধ করা, একাজটি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ এবং সচেতন নাগরিকবৃন্দ দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করবেন।
২০-৩০ টি পরিবার একত্রিত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে আবেদন করলে জরুরি ভিত্তিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ জরিপ করে ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করবেন।
জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সহায়তায়,আশা করছি, দ্রুতই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।
মাইজভাণ্ডার শরীফ গাউসিয়া হক মনজিলে মহান ২২ চৈত্র উরস শরীফের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
ফটিকছড়ি :: মহান ২২ চৈত্র গাউসুল আজম বিল বিরাসাত হযরত সৈয়দ গোলামুর রহমান মাইজভাণ্ডারী (কঃ) র পবিত্র বার্ষিক ওরশ শরীফ মাইজভাণ্ডার শরীফ গাউসিয়া হক মনজিল এ যথাযোগ্য মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে। ২১ চৈত্র,৪ঠা এপ্রিল, দুপুর ৩টায়, গাউসুল আজম হযরত সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (কঃ), গাউসুল আজম বিল বিরাসাত হযরত সৈয়দ গোলামুর রহমান মাইজভাণ্ডারী (কঃ),অছিয়ে গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী (কঃ) হযরত সৈয়দ দেলাওয়ার হোসাইন মাইজভাণ্ডারী (কঃ) এবং মারজাল বাহরাইন, মাজমাউল বাহরাইন বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ)-র পবিত্র মাজার শরীফে আতর, গোলাপ সুগন্ধি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে আওলাদে গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী (কঃ) রাহবারে আলম হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারী (মঃ)-র সদারতে উরস শরীফের আনুষ্ঠানিকতা আরম্ভ হয়েছে।
পবিত্র মাজার শরীফ সমূহে আতর-গোলাপ-পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও জিয়ারত শেষে তিনি মাইজভাণ্ডার শরীফ গাউসিয়া হক মনজিল-এর কেন্দ্রীয় মিলাদ কিয়াম ও মোনাজাত এ অংশগ্রহণ করেন। মুনাজাতে তিনি বলেন,
“মহান ২২ চৈত্র- হুজুর গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী (ক.) কেবলা কাবা-র বেলায়তের বাগানের সর্বোত্তম ফুল,গাউসুল আজম বিল বিরাসাত, কুতুবুল আকতাব শাহসূফি সৈয়দ গোলামুর রহমান মাইজভাণ্ডারী (কঃ) কেবলা কাবা ‘র মহান ওরশ মোবারক। এই ওরশ মোবারককে সামনে রেখে ত্বরিকার ঐতিহ্য অনুসারে,হুজুর গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী (কঃ)-র এই দরবারের ঐতিহ্য অনুসারে,হুজুর গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী (কঃ)-র দরবারে,বাবা ভাণ্ডারী কেবলা আলম-এর দরবারে,
অছি এ গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী(কঃ)-র দরবারে, শাহানশাহ হক ভাণ্ডারী (ক.)-র কদমে আমরা হাজির হয়েছি।” তিনি আতর গোলাপ নিয়ে-সুগন্ধি সুসজ্জিত করে এই পবিএ রওজা শরীফের খেদমত করার তৌফিক প্রদানের জন্য মওলা রব্বুল আলামিনের দরবারে অগণিত শোকরিয়া আদায় করেন। তিনি সকলের এই পবিত্র ওরশে পাকে হাজেরীকে সকলের জন্য গুনাহের-তওবার উসিলা হিসাবে কবুল করার জন্য, এই হাজেরীর ভূল-ত্রুটি ক্ষমা করার জন্য, সকলের গুনাহ-খাতা ক্ষমা করার জন্য এবং এই পবিত্র ওরশ মোবারককে কেন্দ্র করে আশেক- ভক্ত-জায়েরীন-মুহিব্বিন- আশেকিন যারা দূর দূরান্ত হতে হাজির হবার আশা পোষণ করেছেন,সকলে যাতে আরজু মোতাবেক দরবারে হাজির হতে পারে- সেই তৌফিক দান করার জন্য ফরিয়াদ করেন। তিনি এই পবিত্র ওরশ মোবারক উপলক্ষে যা কিছু এন্তেজাম হয়েছে, সমস্ত এন্তেজামকে কবুল করার জন্য এবং যে সমস্ত কর্মসূচিগুলো প্রণীত হয়েছে,সে সমস্ত কর্মসূচীগুলোকে কবুল করার জন্য আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করেন। এই পবিত্র ওরশ মোবারকের বারাকাত-নেয়ামত সকলের উপর মঞ্জুর করার জন্য, এই পবিত্র দিনের বরকতে-উছিলায় সকল আশেক ভক্তের উপর আল্লাহর অফুরন্ত রহমত বর্ষণ করার জন্য, সকলের রিজিকের উপর বরকত দান,শারীরিক সুস্থতা ও পারিবারিক শান্তি দান করার জন্য এবং সকলকে একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবন দান করার জন্য আল্লাহর দরবারে আকুল ফরিয়াদ জানান।
পরবর্তীতে তিনি পবিত্র উরস শরিফে আগত অগণিত আশেক ভক্ত জায়েরীণদের সাক্ষাৎ প্রদান করেন।