
বৃহস্পতিবার ● ১৪ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি : কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ
আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি : কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: উত্তর জনপদের শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে গত কয়েক দিনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে প্লাবিত হয়ে পড়েছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় আড়াই হাজার বিঘা জমির রোপণকৃত আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসল পানির নিচে ডুবে গেছে, এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, বৃষ্টিপাত থেমে গিয়ে দ্রুত পানি নেমে গেলে কিছুটা ক্ষতি এড়ানো যেত। তবে বর্তমানে পানি কমে যাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই, বরং আবার বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেও ধারণা করা যাচ্ছে।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার জানান, এ মৌসুমে আত্রাইয়ে ৬ হাজার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে মনিয়ারী, বিশা, সাহাগোলা, ভোঁপাড়া ও কালিকাপুর ইউনিয়নের অনেক মাঠই প্লাবিত হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার বিঘা জমির আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত।
ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতির বর্ণনা দিয়ে মনিয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সম্রাট হোসেন বলেন, তিনি নিজে প্রায় ৯০ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছিলেন, যার সবগুলোই পানিতে ডুবে গেছে। এতে তার প্রায় ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
মনিয়ারী গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম বলেন, “বর্গা নিয়ে চাষ করেছি। এবার ১০ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছিলাম। এখন সব পানির নিচে। প্রায় ৬০ হাজার টাকার লোকসান হয়েছে। সরকারের কাছে আমরা পুনর্বাসনের দাবি জানাই।
সাহেবগঞ্জের কৃষক মুজাম অভিযোগ করেন, “কিছু জায়গায় কালভার্ট বন্ধ থাকায় পানি নামতে পারছে না। ফলে অনেক কৃষক সমস্যায় পড়েছেন, অথচ এ নিয়ে কেউ কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।”
মির্জাপুর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, “৫ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছিলাম। যতœ করে সার-ওষুধ দিয়েছি, গাছও ভালো হয়েছিল। কিন্তু নদীর পানি বেড়ে সব ডুবে গেছে।
এদিকে নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন, একটানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে নদ-নদীতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ আত্রাই রেলওয়ে স্টেশন পয়েন্টে বিপদ সিমার ৬৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। যদি আর বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে ২/১ দিনের মধ্যে পানি কমা শুরু হবে। আর যদি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে তাহলে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।