
সোমবার ● ২ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » ফটিকছড়িতে কোরবানীর পশুরহাটে ভোগান্তিতে ক্রেতা-বিক্রেতারা
ফটিকছড়িতে কোরবানীর পশুরহাটে ভোগান্তিতে ক্রেতা-বিক্রেতারা
মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ফটিকছড়ি :: টানা কয়েকদিনর বর্ষণে জল কাঁদায় একাকার হয়ে পড়েছে ফটিকছড়ির বিভিন্ন হাটবাজার। ফলে কোরানি পশু ক্রয় বিক্রয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে ক্রেতা বিক্রেতারা।
সরেজমিনে সোমবার উপজেলার বিবিরহাট বজারে গিয়ে দেয়া যায় বৃষ্টিতে জল কাঁদায় একাকার হয়ে আছে পশুর হাট। হাঁটতেও চরম কষ্ট হচ্ছে। এমতাবস্থায় ক্রেতা বিক্রেতারা দুর্ভোগে পড়েছে। ক্রেতারা দাম দেখলেও বৃষ্টিতে রাখার ঝামেলায় নিচ্ছেননা। বলছে দু একদিন পরে নেব।
ক্রেতা মোহাম্মদ মফিজ বলেন,বাজারে গরুর দাম দেখতে আসছি। বৃষ্টির মাঝে বাড়িতে গরু রাখার ঝামেলা পোহাতে হবে। কোরবানির একদিন আগে নেব।
বিক্রেতা আবুল হাসেম বলেন,কয়েকটা গরু নিয়ে আসছি। একটাও বিক্রি করতে পারিনি। সবাই দাম দেখছে।
গত শনিবার নাজিরহাট বাজারেও একই অবস্থা দেখা গেছে। নাজিরহাট বাজারে শত শত গরু দেখা গেছে। ছোট বড় হরেক রকমের গরু উঠেছে বাজারে। তবে বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বিক্রি তেমন জমে ওঠেনি।
বিক্রেতা আফজাল হোসেন জানান, গরুর বাজার তেমন জমে উঠছে না। দু-তিনদিন পরেই বাজার আরো জমতে পারে।
এভাবে উপজেলার প্রায় হাটবাজারের একই চিত্র বলে জানা গেছে।
নানুপুর বাজারের গরু বেপারী সেলিম উদ্দিন জানান, ঝড় বৃষ্টিতে বাজার মন্দা থাকার কারনে তিনটি গরু ১ হাজার টাকা লোকসানে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেলেও এর মধ্যে দর্শকের সংখ্যাই বেশি। দু-একদিন পরেই বাজার ভালো জমবে বলে আশা করছি। একই দাবি করছেন, বাজার ইজারাদারেরও।
বাগান বাজারের ইজারাদার মো. ইব্রাহিম হোসেন বাবুল জানিয়েছেন, অন্য বছরের তুলনায় এবার গরু বিক্রি কম।ঝড় বৃষ্টি কমলে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি।
কোরবানি পশুর হাট জমে উঠার এ সময়ে এমন পরিস্থিতিতে হতাশায় ভুগছেন বিক্রেতারা আর ক্রেতারা বৃষ্টির ভোগান্তি এড়াতে শেষ সময়ের জন্য অপেক্ষা করলেও শংকায় আছেন। শেষ মুহূর্তে পশুর মূল্য কি রকম থাকে।
এদিকে বৃষ্টি বাদলে হাটবাজার না গিয়ে অনেকে ছুটছেন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা খামারে। সেখানে দরদামে মিললে ঈদুল আযহার আগের দিন নিয়ে আসবে বলে রেখে আসছেন।
ক্রেতা হেলাল বলেল,বাজারে জল কাঁদা একাকার হয়ে আছে হাঁটতে ইচ্ছে হয়না। তাই খামারে আসলাম। পছন্দের দুটি গরু নিয়ে রাখলাম ঈদুল আযহার আগের দিন নিয়ে যাব।
খামারী রুবেল বলেন,অধিকাংশ ক্রেতা গরু মহিষ নিয়ে খামারে রেখে যাচ্ছেন। কেউ কেউ কোরবানির দিন নিয়ে যাবে, কেউ কেউ আগের দিন নিয়ে যাবে।
নাজিরহাট বাজারের ইজারাদার মো. আলমগীর বলেন, যত্রতত্র অস্থায়ী গরুর হাট বসানোর কারনে এ বছর অনেক বেপারী কিংবা ব্যবসায়ীরা হাট-বাজারে গরু এনে মার খাচ্ছেন। বিষয়টি উপজেলা পরিষদের কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, রাস্তার ধারে অবৈধভাবে বসা গরুরহাট না বসাতে ইতিমধ্যে ম্ইাকিং করা হয়েছে। আইন অমান্যকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তিনি দাবী করেন সামনের দু-একদিন পরেই বাজার আরো জমবে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় কোরবানীর পশুর চাহিদা রয়েছে ৪৭ হাজার ৩২০ টির মতো। কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৬৯ হাজার ৪১৯টি। এরমধ্যে ৩৪ হাজার ২১১টি গরু, ৪ হাজার ১১২টি মহিষ, ২৮ হাজার ৭৪০টি ছাগল, ২ হাজার ৩৫৬টি ভেড়া।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল মোমিন বলেন, আসন্ন কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে চাহিদার চেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সব পশুর হাটে উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে যেখানে প্রয়োজন সেখানে ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিক বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে ভেটেরিনারি সার্জন থাকবে, তাঁরা পশুদের চিকিৎসা দেবেন।