
মঙ্গলবার ● ২০ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » অপরাধ » বেতবুনিয়াতে ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের জায়গা বিক্রয়ের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফফর এর বিরুদ্ধে
বেতবুনিয়াতে ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের জায়গা বিক্রয়ের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফফর এর বিরুদ্ধে
কাউখালী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি :: খাসখালী ঝুম বন নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের অধিনে কলমপতি বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন নতুনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে সংরক্ষিত বনের সরকারি জায়গা স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা দির্গদিন ধরে বিক্রি করে চলছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, উপজেলার বেতবুনিয়া মডেল ইউনিয়নের ডিলাইট নতুন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে জনৈক মোজাফফর নামক স্থানীয় এক দাপুটে নিষেদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ নেতা দির্গদিন যাবত সরকারি সংরক্ষিত বনের জায়গা বহিরাগত বিভিন্ন লোকের কাছে মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্লট আকারে দখল বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই ব্যাক্তি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যাসিমং মারমার ডান হাত নামে পরিচিত ততকালীন সময়ে এসব সরকারি বন বিভাগের জায়গা প্লট আকারে দখল বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ স্থনীয়দের।
আরো জানা যায় এই মোজাফফর ১৯৮১ ইংরেজি সালে বেতবুনিয়া নতুন পাড়া এলাকায় আসেন এবং সরকারি বন বিভাগের জায়গা দখল করে সেই সময় থেকে বিক্রি শুরু করেন। সেই সময় থেকে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত হন। এর পর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি সেই সময় স্থানীয় সোলেমান পেশকারের রেকর্ডিয় জমি দখল করে দির্গদিন ভোগদখল করেন।
পরে গত ৫ আগষ্ট-২০২৪ ইংরেজি তারিখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে তিনি কিছুদিন পরে সোলেমান পেশকারের রেকর্ডিয় জায়গা দখল ছেড়ে দেয়।
অন্যদিকে এই মোজাফফর নামক ব্যাক্তিটি যে সকল লোকদের নিকট সরকারি বন বিভাগের জায়গা দখল বিক্রি করেন তারা হলেন মোঃ আক্রাম (ড্রাইভার) -০৫ শতক দখল দেড় লক্ষ টাকা, মোঃ বাবুল- ১০ শতক ০৫ লক্ষ টাকা, লোকমান - ৪০ শতক,রফিক - ২০ শতক,মাহমুদ - ১০ শতক, মোঃ শহিদ -২০ শতক, সৈয়দ নুর-৮০ শতক, শাহাদাতের মা-১০ শতক, শহিদ -৩০ শতক, করে প্রত্যেকের কাছে নগদ টাকা নিয়ে তাদেরকে সরকারি বন বিভাগের জায়গা দখল বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
গত ১৮ মে-২০২৫ ইংরেজি তারিখ সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় কলমপতি বন বিভাগের বিট অফিসার মোঃ শরফরাজ খান নতুন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে আক্রাম (ড্রাইভার) নামক এক ব্যাক্তি একটি নতুন একছালা টিনের লাকড়ির ঘর তুলতে গেলে তা বন বিভাগের কর্মীরা তুলতে দেননি। অন্যদিকে জনৈক মোজাফফর সরকারি বন বিভাগের জায়গায় আরকটি নতুন ঘর তুলেছেন। এ ব্যাপারে বনবিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা সরকারি বন বিভাগের জায়গায় নতুন ঘর কেন তুলেছেন জানতে চাইলে মোজাফফর বলেন আমি আমার রেকর্ডিয় জায়গায় ঘর তুলছি।
এ ব্যাপারে যারা মোজাফফর হতে দখলস্বত্ব জমি খরিদ করেছেন তাদের মধ্যে মোঃ আক্রাম (ড্রাইভার) , মোঃ বাবুল, মোঃ শহিদ বলেন আমরা মোজাফফর হতে বেশ কয়েক বছর আগে এই জায়গার দখলস্বত্ব চড়ামুল্যে ক্রয় করে বাড়িঘর করেছি এবং এখানে সব পরিবারগুলো মোজাফফর হতে দখলস্নত্ব ক্রয় করেছে। এটিতো সত্য এখানে মিথ্যার কিছুই নেই। তা ছাড়া আমাদের সকলের দখলস্বত্ব কাগজ আছে বলে তারা সবাই জানান।
এ ব্যাপারে কলমপতি বন বিভাগের বিট অফিসার মোঃ শরফরাজ খান বলেন, আমরা বিষয়টি কাউখালী থানাকে লিখিতভাবে অবহিত করেছি থানা বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যাবস্থা নিবেন এবং ১৪৪ ধারা জারী করার জন্য নয়তা বন আইনে মামলা দায়ের করার জন্য পরামর্শ দেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, যেহুতু জনৈক মোজাফফর নামক ব্যাক্তির একটি কাগজ আছে তা আমরা যাচাই করে দেখবো এবং তার যদি রেকর্ড হয় তাহলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) এর মাধ্যমে সরেজমিনে পরিমাপ করে দেখবো বলে তিনি জানান।
বিষয়টি নতুন পাড়া এলাকায় ব্যাপক চ্যান্চ্যল্যের সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের একজন আওয়ামী লীগ নেতা হয়ে কি করে? সরকারি বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জায়গা এভাবে দখল বিক্রি করে দিনের পর দিন কিভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এটাই স্থানীয় লোকজন দেখতে চায় এই মোজাফফরের খুটির জোর কোথায়? কারা এর পিছনে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য এলাকাবাসি জোর দাবি জানিয়েছেন বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে।