শিরোনাম:
●   রাজনৈতিক দলসমূহের সাধারণ মতৈক্যের ভিত্তিতে সরকারকে সংকট উত্তরণে পদক্ষেপ নিতে হবে ●   রাঙামাটিতে বিপ্লবী যুব সংহতির জেলা কাউন্সিলে ৩৫ বিশিষ্ট কমিটি গঠন ●   আগামী কাল বিপ্লবী যুব সংহতির রাঙামাটি জেলা কাউন্সিল ●   রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা না করে আরপিও চূড়ান্ত করায় ক্ষোভ প্রকাশ ●   বেণুবন উওমানন্দ ধর্মবন বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব ও সংবর্ধনা ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট রাঙামাটি পৌরসভার ০৮ নং ওয়ার্ড কমিটি পূর্ণগঠন ●   টেকসই হবেনা - এমন পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকুন ●   তীর্থ ভ্রমনে বিজয়ানন্দ থেরো ●   ডলুছড়া মহামুনি বৌদ্ধ বিহারে ১৮তম কঠিন চীবর দান ও স্থবির বরণোৎসব সম্পন্ন ●   ভেংগে পড়া নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর জনআস্থা ফিরিয়ে আনাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ ●   থেরবাদী বৌদ্ধদের শ্রেষ্ঠতম জাতীয় ধর্মীয় উৎসব শ্লোগান নিয়ে শীলছড়ি অভায়রণ্য ধন্য কেন্দ্রে কঠিন চীবর দান উদযাপন ●   ফেব্রুয়ারীর সুষ্ঠু নির্বাচনই কেবল এই সরকারকে মুক্তি দিতে পারে ●   কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী নালন্দা বৌদ্ধ বিহারে ৩৮ কঠিন চীবর দান উদযাপন ●   কাল ২৪ অক্টোবর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৮দফা দাবিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ‘ঢাকা সমাবেশ ও গণ মিছিলে ●   কাউখালীতে কৃষি ব্যাংকের মতবিনিময় সভা ●   শীর্ষ চরমপন্থি লিপ্টনের জামিন বাতিল দাবিতে বিক্ষোভ ●   নানিয়ারচরে সেনাবাহিনী বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ বিতরণ ●   ৮ দফা দাবিতে ২৪ অক্টোবর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা সমাবেশ ও গণমিছিল ●   মিরসরাইয়ে ৭৫ লক্ষ টাকার চরঘেরা জাল ধ্বংস ●   ওসি ওবায়দুর রহমানের নেতৃত্বে অপরাধ দমনে ঈর্ষণীয় অগ্রগতি
ঢাকা, শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২

Daily Sonar Bangla
বুধবার ● ২ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থ-খাদ্যশস্য বরাদ্দ নিয়ে পাহাড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে
প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থ-খাদ্যশস্য বরাদ্দ নিয়ে পাহাড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে
২৬৫ বার পঠিত
বুধবার ● ২ এপ্রিল ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থ-খাদ্যশস্য বরাদ্দ নিয়ে পাহাড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে

--- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থ-খাদ্যশস্য নিয়ে পাহাড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সুবিধা বঞ্চিত বাঙালিরা নিরব থাকলেও ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায় ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছে। বৈষম্য ও স্বজনপ্রীতি বরাদ্দ বাতিল না হলে পাহাড়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বর্জনের হুমকি দিয়েছে ত্রিপুরা ও মারমা জনগোষ্ঠী।
জানা গেছে, মুসলিম সম্প্রদায়ের ঈদ-উল-ফিরত ও পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি-কে সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকার নগদ অর্থ ও খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয়।
অভিযোগ রয়েছে,পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধিন তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে পরপর তিন দফায় অর্থ ও খাদ্যশস্যে বরাদদ্দে চরম বৈষম্য, স্বজনপ্রীতি, অনৈতিভাবে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের নামে-বেনামে অর্থ ও খাদ্যশস্য বরাদ্দের করনে পাহাড়ে নুতনভাবে সাম্প্রদায়িক চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছে ততই রাজপথে প্রকট হচ্ছে বিভিন্ন ব্যানারে স্থানীয় সামাজিক সংগঠনগুলো প্রতিবাদ বিক্ষোভ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অতীতের আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দসমূহে অনিয়ম, লুটপাটের বিস্তর অভিযোগ উঠলেও ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বৈষম্যহীন বা জনগোষ্ঠির অনুপাতে সমতা ভিত্তিক হওয়ার কথা থাকলেও তিনদফার বরাদ্দ যেন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে বর্তমান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সাম্প্রদায়িকতার কাছে।
তিনদফার বরাদ্দকৃত তালিকা ঘেঁটে ও তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, চলতি বছরের গত ২৫মার্চ খাগড়াছড়ির জেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়-১ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ নাহিদ ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অধিন ২য় পর্যায়ে ৩ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানে আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ১৯৫ ব্যক্তি/প্রতিষ্টানের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। যার মধ্যে ৯৬জন চাকমা সম্প্রদায়ের অনুকূলে ২ কোটি ৩২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ৪০ জন মারমা উপজাতির বিপরীতে ২১ লাখ ৭ ০হাজার, ৩৬ জন বাঙালির মধ্য মুসলিম বাঙালির মধ্য ৪৭লাখ ১০ হাজার টাকা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের অনুকূলে মাত্র ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ও ৭ জন ত্রিপুরা উপজাতির বিপরীতে ৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। তালিকা পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, মোট বরাদ্দের ৭৩.০৯% চাকমা সম্প্রদায়ের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়।
এর আগে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ১ম পর্য্যায়ের খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রকল্পে কর্মসূচি হতে ৭৫১ মে. টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়। তন্মধ্যে চাকমা সম্প্রদায়ের অনুকূলে ৪ শ ৬০ মে.টন, মারমা সম্প্রদায়ের অনকূলে ৯২ মে.টন, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের অনুকূলে ৬৬ মে. টন ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর হিন্দু , বড়ুয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের অনুকুলে ১৩৩ মে. টন বরাদ্দ দেয়া হয়। এদিকে, ৩য় পর্যায়ে ১ হাজার ৯ শ ১৩ মে. টন খাদ্যশস্য বরাদ্দে দেখা যায়, চাকমা সম্প্রদায়ের অনুকূলে ১হাজার ৮ শ ১৩ মে:টন মারমা সম্প্রদায়ের অনুকূলে ২০ মে. টন, বাঙালি সম্প্রদায়ের অনুকুলে ৮০ টন বরাদ্দ দেয়া হলেও ত্রিপুরা,সাঁওতাল ও বড়–য়া সম্প্রদায়ের জন্য কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।
পর পর তিন দফার অর্থ ও খাদ্যশস্য বরাদ্দের এমন বৈষম্যমূলক তালিকার চিত্র সোশ্যাল নেটওয়ার্কে প্রকাশের পর পরই ফুঁসে ওঠেছে খাগড়াছড়িতে। জেলা শহরসহ জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা। সমালোচনার ঝড় ওঠে নানা মহল থেকে। তালিকা অনুসন্ধান করে দেখা যায়, বৈষম্যের পাশাপাশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ফ্যাসিবাদ সরকারের দোসরদেরও।
অভিযোগ ওঠেছে, মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা নিজ চাকমা সম্প্রদায়ের জন্য একচেঁটিয়া বরাদ্দের পাশাপাশি পার্বত্য জেলা পরিষদের চাকমা সম্প্রদায়ের সদস্য বঙ্গমিত্র চাকমার পরিকল্পনায় তার নিজ আবাসস্থান কমলছড়ির জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন চোখবন্ধ করে। বরাদ্দের তালিকায় দেখা যায়, (ক্র:নং-২৭) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নির্বাহী সংসদের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের পিতা নুরুচ্ছপা একটি সমিতির নাম করে বরাদ্দ পেয়েছেন ১ লক্ষ টাকা, (ক্র:নং-৫৭ ও ৪) এর বিপরীতে জেলা শহরের মহাজন পাড়া সূর্য্য শিখা ক্লাবের অনুকূলে বিজু উপলক্ষে জনৈক শান্তিময় চাকমার নামে ২লক্ষ টাকা, নোভেল চাকমার নামে ৩লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া। এক প্রতিষ্ঠানে ২ বারেই ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়। ক্র:নং-২৫ অনুকুলে জনৈক মাহাবুব আলমের ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া।
জানা যায়, মাহাবুব আলম আওয়ামী দোসর সাবেক মেয়র রফিকের নিকট আত্মীয় ও তার বড় ভাই সাবেক যুবলীগ নেতার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
অভিযোগ রয়েছে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে সাবেক খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমের পুরো পরিবার রাজপথে নেমে আসে ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হাস্যকর ও আশ্চর্য্যরে বিষয়, (ক্র:নং-৫৪) জেলা শহরের কলেজ গেইট বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় জনৈক নিশিমনি চাকমা ১লক্ষ টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি সমবায় সমিতির নাম করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ নামে কোনো সমিতরি অস্থিত্বও নাই পুরো ওয়ার্ডে। এছাড়াও প্রকল্পের অনুকূলে মহাজন পাড়া এলাকায় একটি কো-অপারেটিভ সোসাইটর নামে পরিষদের সদস্য নিটোলমনি চাকমা বরাদ্দ পেয়েছেন ৩ লক্ষ টাকা, পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক মাটিরাঙা উপজেলার একটি মাদরাসার নামে পেয়েছেন ৩লক্ষ টাকা। পরিষদের অ-উপজাতি সদস্য প্রফেসর আব্দুল লতিফের দুই ভাই ৪২ নং ক্রমিকের অনকূলে মো: হাছানুজ্জামান, ৫৭ নং ক্রমিকের অনুকূলে সদস্যের ভাইয়ের স্ত্রী পারভিন আক্তার ও অপর ভাই ৬৪ নং ক্রমিকের অনূকূলে তিনটি প্রকল্পের বিপরীতে নামে বেনামের সমিতির নামে করে ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পান।
অপরদিকে, খাদ্যশস্যের তালিকায় দেখা যায়, ৯ নং ক্রমিকের জনৈক এইচ বাবু ড্রিমল্যান্ড সমবায় সমিতির নামে ১৫ টন খাদ্যশষ্য বরাদ্দ পান। জানা গেছে, এ সমিতিটি বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে রনি, ফারুক, বাজারের দিদার, ছাত্রলীগের পলাতক একাধিক নেতাকর্মী নিয়ে গঠিত। এ সমিতির কাজ হল জায়গা ক্রয়-বিক্রয় করা। এসমিতির নামে সরকারি বিসিক খাগড়াছড়ি সংলগ্ন এলাকায় সরকারি খাসটিলা জবরদখলের অভিযোগ রয়েছে। অর্থ বরাদ্দে নতুন চমক রাখা হয়েছে বস্তায় চাষাবাদ। যা এর আগে কোনো বরাদ্দ এ নামে বরাদ্দ দেয়া হয়নি। ১৭৮ নং ক্রমিকে মোস্তফা শিবলী, শিবলী ফার্মসের নাম দিয়ে ১০ লক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়। জুনো পহর নামক একই সমিতিতে নামে বেনামে ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ১৭৫ ও ১৭৬ ক্রমিকের একই পরিবারে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
অপরদিকে, খাদ্যশস্যের তালিকায় দেখা যায়, ৯ নং ক্রমিকের জনৈক এইচ বাবু ড্রিমল্যান্ড সমবায় সমিতির নামে ১৫ টন খাদ্যশষ্য বরাদ্দ পান। জানা গেছে, এ সমিতিটি বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে রনি, ফারুক, বাজারের দিদার, ছাত্রলীগের পলাতক একাধিক নেতাকর্মী নিয়ে গঠিত। এ সমিতির কাজ হল জায়গা ক্রয়-বিক্রয় করা। এসমিতির নামে সরকারি বিসিক খাগড়াছড়ি সংলগ্ন এলাকায় সরকারি খাসটিলা জবরদখলের অভিযোগ রয়েছে। অর্থ বরাদ্দে নতুন চমক রাখা হয়েছে বস্তায় চাষাবাদ। যা এর আগে কোনো বরাদ্দ এ নামে বরাদ্দ দেয়া হয়নি। ১৭৮ নং ক্রমিকে মোস্তফা শিবলী, শিবলী ফার্মসের নাম দিয়ে ১০ লক্ষ বরাদ্দ দেয়া হয়। জুনো পহর নামক একই সমিতিতে নামে বেনামে ৫ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ১৭৫ ও ১৭৬ ক্রমিকের একই পরিবারে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
সবচেয়ে বড় অভিযোগ, নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের নাম ভাঙিয়ে ১২ টি প্রকল্পের অনুকূলে মোটা দাগে ২৫ লক্ষ টাকা অর্থ বরাদ্দ পান ত্রিনা চাকমা নামে এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকার। জানা যায়, এ ত্রিনা চাকমা একজন আওয়ামী দোসর ও সহচর। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে নারী উদ্যোক্তার নাম ভাঙিয়ে এর আগে পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা মহিলা কল্যান সংস্থা হতে নামে বেনামে বিপুল পরিমান অর্থ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে।
বরাদ্দে স্থান পেয়েছেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীও। নজরুল ইসলাম মাসুদ প্রকাশ টোকাই নজরুল নামে-বেনামে প্রকল্পের বিপরীতে লক্ষ লক্ষ টাকা। এ নজরুল এক সময় বিএনপির নেতা ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাসার দারোয়ান ছিল। একাধিবার জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পৌরসভা ও উপজেলা নির্বাচনের জাপা প্রার্থী নজরুল ইসলাম মাসুদ প্রকাশ টোকাই নজরুল ১ নং ক্রমিকে রক্তদান ফাউন্ডেশন নামে ৫০ হাজার টাকা, একই টীমে ২ নং ক্রমিকে মো: জালাল হাসিখুশি শিল্পগোষ্ঠির নামে ৪০ হাজার টাকা ও জনৈক জুয়েল দেবনাথ হিলমুন কালচালার গ্রুপের নামে ৩০ হাজার টাকাসহ মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন।
টোকাই নজরুল জানান, তিনি আর্থিক সুবিধা পেতে ৭টি আবেদন করেছেন। বিপরীতে ৩ টির অনুকুলে বরাদ্দ পেয়েছেন।
এক কথায়, তিন দফার এসব প্রকল্পের সিংহভাগই স্বজনপ্রীতি বৈষম্যমূলক, ভূয়া মনগড়া ও অর্থ আতœসাতের অপচেষ্ঠার এক বিরল দৃষ্টান্ত!
স্থানীয় সুশীল সমাজের নাগরিকদের অভিমত, সূদূর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এবারের বরাদ্দগুলো দেয়া হয়েছে। একটি সম্প্রদায়ের মাঝে একচেঁটিয়ে বরাদ্দ দিয়ে একটি চক্র পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক-সম্প্রতি বিনষ্টের পাশাপাশি আগামী সংসদ নির্বাচনকে লক্ষ রেখে নীল নক্সা একেঁ সাম্প্রদায়িক ভোট ভাগাভাগির অংক কসছে। যা মেনে নিতে পারছে না অপরাপর মারমা-ত্রিপুরা ও বাঙালি জনগোষ্ঠি।

এ বিষয়ে জানতে তালিকার ২৭ নম্বরে খেজুরবাগান বিত্তহীন সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক শাহাদাত এর পিতা নুরুচ্ছাফার মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। বরাদ্দ পাওয়াদের অনেকে কখন কি নামে প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছেন তার উত্তর দিতে পারেনি। তালিকায় ৫৪ নম্বরে সদরের কলেজ গেট এলাকার পাহাড়ী বাঙালী সম্প্রীতি সমবায় সমিতির সভাপতি নিশি মনি চাকমা নামে একজনের। মুঠোফোনে তার কাছে প্রকল্পের অবস্থান এবং সমিতির নাম জানতে চাইলে তিনি উত্তর দিতে পারেননি। তবে সমিতির সাধান সম্পাদক যুবদল নেতা পরিচয় দেয়া নুরুল আলম বলেন, সমিতির নামে সমবায় শব্দ থাকলেও বাস্তবে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন নেই বলে স্বীকার করেন তিনি।এ ছাড়া অনেক প্রকল্পের বিষয়ে জানতে তালিকা দেয়া মুঠোফোন নাম্বারে কল দেয়া হলেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া গেছে। অনেকে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সংযোগ কেটে দিয়েছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে থেকে আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় অর্থ বরাদ্দ শিরোনামে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর গত ২৬ শে মার্চ থেকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকে পোষ্ট করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। খুকু ত্রিপুরা নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, ত্রিপুরা মারমা অনেক খেয়েছে আর না, এই উক্তিটির বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ তাহলে শুরু হলো…’’ পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা দায়িত্ব পাওয়ার পর এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। বিনোদন ত্রিপুরা নামে এক উন্নয়ন কর্মী লিখেন, কোন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এই তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে জাতির নিকট উন্মুক্ত করুন পার্বত্য উপদেষ্টা মহোদয়। আরেকজন লিখেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে ২৪ এর জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের প্রতি চরম অসম্মান দেখিয়েছেন পার্বত্য উপদেষ্টা। নিজ জেলা খাগড়াছড়িতে ৩ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রাঙামাটিতে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা ও বান্দরবানে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খাগড়াছড়িতে পার্বত্য উপদেষ্টার বাড়ি। আত্মীয় স্বজনে ভরা। তাই বৈসাবি বাদ দিয়ে বিঝু উদযাপনে মনখোলে বরাদ্দ দিয়েছেন। এখানে কি অন্য দুই জেলার সাথে বৈষম্য করা হয়নি?
পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের খাগড়াছড়ি শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদ উল্লাহ জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যায় পাহাড়ী বাঙালী উভয় স¤প্রদায়কে সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সার্বিক উন্নয়ন, চিকিৎসা ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে যে বরাদ্দ দিয়েছে তাতে আমরা দেখলাম পাহাড়ীদের মধ্যে চাকমা স¤প্রদায় বেশী বরাদ্দ পেয়েছে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলে বাঙালী মাত্র ৩৮টি প্রকল্প পেয়েছে। পার্বত্য উপদেষ্টার অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম নিয়ে পাহাড়ে বহুবার আন্দোলন হয়েছে। এ বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমরা আবারও আন্দোলনে নামব।
মনগড়া, বৈষম্যমূলক ও ভুয়া প্রকল্পের বিষয়ে জানতে একে একে কল করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার একান্ত সচিব, সচিব ও উপসচিবদের নাম্বারে। উপদেষ্টার একান্ত সচিব খন্দকার মুশফিকুর রহমানের মুঠোফোনে কল রিসিভি করে এ বিষয়ে সচিবের সঙ্গে কথা বলতে বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। সচিবের দপ্তরের ল্যান্ড ফোনে কল করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানানো হয়। পরবর্তীতে কল দেয়া হলে আর রিসিভ হয়নি। বরাদ্দ স্বাক্ষরকারী মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়-১ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ নাহিদ ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সংযোগ কেটে দেন।
এদিকে, পবিত্র ইদুল ফিতর উপলক্ষে সকল সম্প্রদায়ের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার সোশ্যাল নেটওয়ার্কে বিস্তরভাবে স্থান করে নিলেও মাঠে নেমেছে ত্রিপুরা ও মারমা জনগোষ্ঠি।
গত ২৯ মার্চ বৈষম্যমূলক বরাদ্দের প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ ও বিক্ষুব্ধ মারমা জনগোষ্ঠি । মানববন্ধনে বক্তারা আগামী ৫এপ্রিলের মধ্যে বৈষম্যমূলক অর্থ ও খাদ্যশস্যের তালিকা বাতিল করে নুতনভাবে সুষম বন্টনের উদ্যোগ না নিলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারী দেন। মানববন্ধনে ত্রিপুরা কল্যান সংসদ সংসদের সভাপতি কমল বিকাশ ত্রিপুরা, সাধারন সম্পাদক এ্যাড. শুভ্রদেব ত্রিপুরা, ত্রিপুরা ঐক্য পরিষদের আহবায়ক খনিরঞ্জন ত্রিপুরা, মারমা ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেল মারমা, মারমা যুব সমাজের নেতা ক্যরী মগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।
তাদের দাবী বৈষম্যমূলক বরাদ্দ বাতিল করে সু-সম বরাদ্দ না দিলে পাহাড়িদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি উদযাপন বর্জনসহ আরো কঠোর কর্মসূচী নেওয়া হবে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, বরাদ্দ নিয়ে সকল অংসিজনদের সাথে আলাপ-আলোচনা চলছে। তিনি বলেন,সবাই বৈসাবি উৎসব উপভোগ করতে অপেক্ষা করছে। আশা করছি একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে।
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রলালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজুয়ান খানকে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও সারা পাওয়া যায়নি।





ছবি গ্যালারী এর আরও খবর

রাজনৈতিক দলসমূহের সাধারণ মতৈক্যের ভিত্তিতে সরকারকে সংকট উত্তরণে পদক্ষেপ নিতে হবে রাজনৈতিক দলসমূহের সাধারণ মতৈক্যের ভিত্তিতে সরকারকে সংকট উত্তরণে পদক্ষেপ নিতে হবে
রাঙামাটিতে বিপ্লবী যুব সংহতির জেলা কাউন্সিলে ৩৫ বিশিষ্ট কমিটি গঠন রাঙামাটিতে বিপ্লবী যুব সংহতির জেলা কাউন্সিলে ৩৫ বিশিষ্ট কমিটি গঠন
আগামী কাল বিপ্লবী যুব সংহতির রাঙামাটি জেলা কাউন্সিল আগামী কাল বিপ্লবী যুব সংহতির রাঙামাটি জেলা কাউন্সিল
রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা না করে আরপিও চূড়ান্ত করায় ক্ষোভ প্রকাশ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা না করে আরপিও চূড়ান্ত করায় ক্ষোভ প্রকাশ
বেণুবন উওমানন্দ ধর্মবন বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব ও সংবর্ধনা বেণুবন উওমানন্দ ধর্মবন বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব ও সংবর্ধনা
পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট রাঙামাটি পৌরসভার ০৮ নং ওয়ার্ড কমিটি পূর্ণগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম বড়ুয়া সংগঠনের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট রাঙামাটি পৌরসভার ০৮ নং ওয়ার্ড কমিটি পূর্ণগঠন
টেকসই হবেনা - এমন পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকুন টেকসই হবেনা - এমন পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকুন
তীর্থ ভ্রমনে বিজয়ানন্দ থেরো তীর্থ ভ্রমনে বিজয়ানন্দ থেরো
ডলুছড়া মহামুনি বৌদ্ধ বিহারে ১৮তম কঠিন চীবর দান ও স্থবির  বরণোৎসব সম্পন্ন ডলুছড়া মহামুনি বৌদ্ধ বিহারে ১৮তম কঠিন চীবর দান ও স্থবির বরণোৎসব সম্পন্ন
ভেংগে পড়া নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর জনআস্থা ফিরিয়ে আনাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ ভেংগে পড়া নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর জনআস্থা ফিরিয়ে আনাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ

আর্কাইভ